Posts

যত সব বাগাড়ম্বর

Image
যত সব বাগাড়ম্বর ...  সুদীপ পাঠক  ইংরেজি  ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ১৬ ই মে আমার জন্মদিন । তবে যেহেতু বাংলা মতে পয়লা জৈষ্ঠ আমার ভূমিষ্ঠ হওয়ার দিন তাই নিয়ম মাফিক জননী প্রতি বছর ঐ দিন পরমান্ন রাঁধেন। পারিবারিক প্রথা মেনে চিরকাল এটাই হয়ে আসছে । ফু দিয়ে মোমবাতি নেভানো , কেক কাটা এসবের চাষপাট কোনো কালেই ছিল না । ২০০০ সালে উত্তর কলকাতা ছেড়ে দমদমের ফ্ল্যাটে চলে আসার পর একবার দুবার বন্ধুরা উদ্যোগ নিয়ে সেসবের আয়োজন করেছিল বটে তবে আমার কাছে তা খুবই বিড়ম্বনার বস্তু । মনে হয় যেনো কানাছেলের নাম পদ্মলোচন । সে যাই হোক এবার আসল কথায় আসা যাক । জ্ঞান হবার পর থেকে বহুবার শুনেছি নিজ জন্ম বৃত্তান্ত । আমার  মাতুলালয় দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার সুভাষগ্রামে । আগে নাম ছিল চাংড়িপোতা । নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর পিতা শ্রী জানকীনাথ বসু পার্শ্ববতী কোদালিয়া নামের গ্রামে এক বৃহৎ অট্টালিকাসম বাসভবন নির্মাণ করেছিলেন । সেই সূত্রে স্বাধীনতা উত্তর যুগে সমগ্র অঞ্চলের নতুন নামকরণ হয় সুভাষগ্রাম । মামারবাড়ীর মিউনিসিপ্যালিটি  হাসপাতালে আমি পৃথিবীর আলো দেখি । অবশ্য রাত সোয়া বারো...

আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলী

Image
আজ ১৭ই মে। মৃত্যুর সার্ধশতবর্ষ দিবসে আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলী। জনস্বাস্থ্য- ভাবনায় রাধানাথ শিকদার লিখেছেন প্রখ্যাত অঙ্কোলজিস্ট সাহিত্যে রবীন্দ্র পুরস্কার প্রাপ্ত ডঃ শঙ্কর কুমার নাথ উ নিশ শতকের মাঝামাঝি গুটিবসন্ত রোগের ভয়াবহ প্রাদুর্ভাবে বাংলার গ্রাম-শহর আতঙ্কিত হয়ে ওঠে। সমাজে ত্রাসের সঞ্চার হয়, যদিও অনেক আগেই চালু হয়ে গিয়েছিল বাংলা টিকা (Inoculation) এবং ইংরেজি টিকা (Vaccination) পদ্ধতি। মৃত্যুর হার বৃদ্ধি পাচ্ছিল। সরকার কালবিলম্ব না করে গুটি বসন্ত রোগের প্রেক্ষিতে একটি বিশেষ কমিটি গঠন করে দেয়। সেই কমিটিতে ছিলেন ডাক্তার ল্যাম্ব (ফিজিশিয়ান জেনারেল), ডাক্তার ফরসাইথ (মেডিকেল বোর্ড সচিব), ডাক্তার ডি, স্টুয়ার্ট (টিকা ব্যবস্থার অধীক্ষক), বাবু রসময় দত্ত কোর্ট অফ রিকোয়েস্টের কমিশনার), বাবু রামগোপাল ঘোষ (ব্যবসায়ী), পন্ডিত মধুসূদন গুপ্ত (মেডিকেল কলেজের শিক্ষক) এবং মিস্টার ডবলু, টি, ল ( পুলিশ সুপার)। এই কমিটি সামগ্রিকভাবে এই রোগ সম্পর্কে অনুসন্ধান করে রিপোর্ট জমা দিয়েছিলেন ১৮৫০ সালের ১লা জুলাই। এই অনুসন্ধানের একটা অংশে ছিল সমাজের কয়েকটি বিশিষ...

লকডাউন

Image
Nitya Ganguly লকডাউন ২২ শে মার্চ। লকডাউন ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে মস্ত তালা পড়েছিল মনের দরজায়। যাব্বাবা ? আটকে গেলাম ? এ আবার কি ? এতোখানি বয়স হল এরকম আজব ব্যাপার তো কখনও ঘটতে দেখিনি। আসমুদ্র হিমাচল থমকে গেল গো - স্ট্যাচু খেলার ভঙ্গিমায়। এতোদিনের চেনা পৃথিবীকে বড় অচেনা লাগছে। বিশ্বব্যপী করোনার করাল ছায়ায় সন্দেহের মেঘ ঘনিয়ে উঠেছে মনের মধ্যে। বিশ্ব জুড়ে শুধু মৃত্যুমিছিল। সেই ভিড়ে মিশে গেল ভারতবর্ষ।   ইতিমধ্যে গৃহবন্দী এই অবস্থার সাথে নিজেকে মানিয়ে নিতে শিখেও গেলাম দিব্যি। খানিকটা অভ্যস্তই হয়ে গেছি একদম বাইরে না বেড়িয়ে একটানা ঘরে থাকতে। খুব অসুবিধা কিছু বোধ করি না। তবে সত্যি বলতে কি , মনের একদম ভেতর থেকে ভালো নেই। খুব অপরাধবোধে ভুগছি। আমার তো তাও দুমুঠো জুটে যায় ঠিক। একপেট খিদে নিয়ে শ্রান্ত ক্লান্ত শ্রমিকের দল মাইলের পর মাইল হেঁটে যাচ্ছে শুধু ঘরে ফিরবার তাগিদে , আপনজনের কাছে পৌঁছবার আশায়। ইন্ডিয়া আজ হোম - কোয়ারেন্টিনে আর ভারতবর্ষ পথে ...

বেঁচে ওঠার লকডাউন

Image
Piyali Halder বেঁচে ওঠার লকডাউন প্রতিদিনই শুতে শুতে ভোর হয়। পাখিদের আওয়াজ , কালো কাটা জানলার বাইরের দৃশ্য আর কয়েক ঢোখ জল খেয়েই শুতে যাই। লকডাউনেও এই রুটিনের বদল হয়নি তেমন। লকডাউনের দৈর্ঘ্য বেড়ে চলা , বাড়িবন্দি দশার যন্ত্রণা , মাপা জীবনচর্চা , ভালবাসার মানুষদের অদেখার অনন্তকাল যাপন - সব মিলিয়ে হতাশা , বরক্তি , মনখারাপ , একগাদা দুশ্চিন্তা নিয়ে যখন লকডাউনের প্রায় দেড়টা মাস অতিক্রম করে ফেললাম , এমন দিনে মন ভালো করে দেয় নিস্তব্ধ রাস্তাঘাট , মাঝরাতে কোকিলের ডাক , সারা সকাল জুড়ে শালিখ , চড়ুই - এর কিচির মিচির , একপশলা বৃষ্টি পড়লেই ছোটবেলার কবিতায় পড়া ব্যাঙের গ্যাঙর গ্যাঙর ডাক , রাস্তার ধারের ফুটপাথগুলোয় পেতে রাখা পাথরের ফাঁক দিয়ে উঁকি দেওয়া সবুজ ঘাস - চারারা। গোটা শীতে ধুলো জমা গাছের দিকে তাকিয়ে এখন আর মন খারাপ করেনা , বরং গ্রীষ্মের এমন দিনেও শহর কোলকাতায় যেন সবুজের মেলা বসেছে। পাড়ার অলি গলি থেকে বড় রাস্তার দুধারে জমছে না প্লাস্তিকের স্তূপ , দ...